পারিবারিক আদালতে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে অন্যকে ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ না দিতে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিন আদালতে বাদীপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. সাইদুল আলম খান। অপরদিকে বিবাদী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম খালেদ আহমেদ।
ব্যারিস্টার মো. সাইদুল আলম খান সাংবাদিকদের জানান, এ মামলার বাদী এক নারী তার আমেরিকা প্রবাসী সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে দেনমোহর ও সন্তানের ভরণপোষণের দাবিতে মামলা করেন। সে মামলায় বিবাদী তার পক্ষে মামলা লড়তে এক আত্মীয়কে ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ করেন। কিন্তু ‘ফ্যামিলি কোর্ট অর্ডিন্যান্স-১৯৮৫’ অনুযায়ী পারিবারিক মামলায় ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ নেয়ার বিধান নেই। সিলেটের পারিবারিক আদালত এই মামলার বিবাদীর ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ গ্রহণ না করে আদেশ দেন।
সে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিবাদী আপিল করলে সিলেটের জেলা জজ আদালত সে আপিল খারিজ করেন। তবে বিচারিক আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একপর্যায়ে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে আমেরিকা প্রবাসী ওই বিবাদী।
পরবর্তীকালে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ওই রিভিশন আবেদনের শুনানি করা হয়। শুনানিতে পারিবারিক আদালতের মামলায় দেওয়ানি কার্যবিধির ১০ ও ১১ ধারার বাইরে অন্য কোনো ধারা প্রযোজ্য হবে কি না সে বিষয়ে হাইকোর্টের সামনে ভিন্ন ভিন্ন রায় পরিলক্ষিত হয়।
একপর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করতে প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান। পরে প্রধান বিচারপতি রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠন করে দেন।
বৃহত্তর বেঞ্চ রিভিশন আবেদনটি শুনানির একপর্যায়ে মতামত নিতে চারজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন। পরবর্তী সময়ে সিনিয়র আইনজীবী এম আই ফারুকী, এ এফ হাসান আরিফ, কামালুল আলম ও প্রবীর নিয়োগী এ বিষয়ে আদালতে তাদের অভিমত দেন। এরপর আদালত আজ রায় ঘোষণা করেন।