‘গতবছরের এই সময়ে গোলাপে ভর্তি ছিল বাগান। এ বছর কিছুই নেই। ৭০ হাজার টাকা খরচ করে ৭০ টাকাও বিক্রি করতে পারিনি। ফুল না ফুটতেই ঝরে যাচ্ছে। কীটনাশক আর সার দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। এবার মনে হয় লোকসান নিশ্চিত।’ এভাবেই ফুল নিয়ে হতাশার কথা জানান কৃষক মজিবর রহমান।
শুধু মজিবর নয়, সাভারের গোলাপ গ্রামের সব চাষীরই একই কথা।ছত্রাকের কারণে নষ্ট হচ্ছে গোলাপ ফুল। ফলে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন তারা।তবে উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, ঠান্ডা বেশির কারণে ফুলের পাপড়ি ঝরে যাচ্ছে।
তিনি জানান, সামনে ২১ ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসা দিবস আর ২৬ মার্চ। এ সময়টায় ফুলের চাহিদা থাকে। দামও পাওয়া যায় বেশ। অথচ অজ্ঞাত রোগে সব শেষ। প্রতিটি বাগানের একই চিত্র।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের লোকজন থেকে ২-১ বার ঘুরে গেছেন। কিন্তু কিছুই বলছেন না। বারবার যোগাযোগ করলেও কোনো কাজে হচ্ছে না। এর আগে ২০১৭ সালেও এমন রোগ হানা দিয়েছিল গোলাপ গ্রামে।
রাজধানীর বারিধারা থেকে পরিবার নিয়ে আসেন অনুপম রায়। তিনি জানান, প্রতিবছর শীতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসি গোলাপ গ্রামে। যেখানে খেজুরের রসও খাওয়া হয় আর নেয়াও হয় নানা রঙের গোলাপের সুভাশ। তবে এবার রস খেলেও গোলাপের সুভাশ নিতে পারছি না। বাগান ফাঁকা।
ভালোবাসার মানুষকে গোলাপ রাজ্য দেখাবেন বলে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসেন সেন্টু। কিন্তু এসে হতাশ। তার মতে এখন ফুলই নেই গাছে। যা আছে তাও নষ্ট হয়ে পড়ছে।
সাভারের ৩০০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হলেও বিরুলিয়াতেই রয়েছে ২০০-২২০ হেক্টর। যার বেশির ভাগই গোলাপ। তবে কসমস, গাঁদা, জারভারা ও গ্ল্যাডিওলাস ফুলের চাষও হয় এ গ্রামে।
স্থানীয় ফুল চাষী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বলেন, এরই মধ্যে ৯৫ থেকে ৯৬ শতাংশ ক্ষেতই নষ্ট হয়ে গেছে। যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ছে চাষীরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা নাজিয়াত আহমেদ বলছে, অতিমাত্রায় শীতের কারণে এবার বাগানে ছত্রাক আক্রমণ করেছে।একটু গরম পড়লেই ঠিক হয়ে যাবে। তবে মাটি ও পানি পরিক্ষা করে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।